প্লানটার ফাস্সাইটিস বা ফেস্সিওপ্যাথি কি?
সাধারণ ভাবে বললে,প্লানটার ফাস্সাইটিস হল পায়ের তলার নিচের ব্যথা।আমাদের পায়ের তলাকে প্লানট বলা হয়। পায়ের তলার চামড়া ও চর্বির নিচে এক ধরনের পাতলা পেড থাকে, যাকে প্লানটার ফাস্সা বলে। এটা সংযুক্ত থাকে পায়ের গোড়ালি থেকে আংগুল পর্যন্ত। যেটা পায়ের তলার বক্রতাকে নিয়ন্ত্রণ করে। এই পাতলা ফাস্সায় যে কোন কারণে প্রদাহ হওয়াকে প্লানটার ফাস্সাইটিস বা ফেস্সিওপ্যাথি বলে। গোড়ালি ব্যথার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কারণ হলো প্লানটার ফাস্সাইটিস বা ফেস্সিওপ্যাথি। এটা ঐসব আঘাত জনিত কারণে হয়, যা প্রকাশ্য না।
দুই পদ্ধতিতে প্লানটার ফাস্সাইটিস হতে পারে।
১। প্লানটার ফাস্সার দীর্ঘ প্রসারণ- এটা ঘটে পায়ের বক্রতা স্বাভাবিকের তুলনায় কমে গেলে অথবা শরীরের কাঠামোগত কোন ত্রুটি হলে।২। প্লানটার ফাস্সার দীর্ঘ সংকোচন-এটা ঘটে সাধারণত আঘাত জনিত কারণে। যেমন-উচু থেকে কোন শক্ত মেঝেতে লাফিয়ে পড়ায় পায়ের নিচে আঘাত পাওয়া ইত্যাদি।
কারা প্লানটার ফাস্সাইটিসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে আছেন?
১। ডায়াবেটিস আক্রান্ত ব্যক্তি।
২। শরীরের উচ্চতা অনুযায়ী, অতিরিক্ত ওজন সম্পন্ন ব্যক্তি।
৩। দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে কাজ করা ব্যক্তি।
৩। গর্ভবতী মায়েরা।
৪। বাত জনিত রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি।
৫। শক্ত জুতা ব্যবহার কারী।
১। ক্রীড়াবিদ -যাদের পূর্বে গোড়ালি মচকানোর ইতিহাস আছে। যেমন - দৈড়বীদ
প্লানটার ফাস্সাইটিসের লক্ষণসমূহঃ
@ প্রাথমিক প্লানটার ফাস্সাইটিস -
১। সকালে বা বিশ্রামের পর পায়ের গোড়ালির নিচে ব্যথা হওয়া।
২। সকালে প্রথম স্টেপে ব্যথা বাড়বে, কিছু সময় হাটলে ব্যথা কমে যাবে।
@ দীর্ঘস্থায়ী প্লানটার ফাস্সাইটিস -
১। স্বাভাবিকভাবে বিশ্রামের সময় গোড়ালির নিচে ব্যথা হবে না।
২। দীর্ঘ সময় হাটলে বা দাঁড়িয়ে থাকলে ব্যথা হবে।
৩। হাটার সময় বা দাঁড়িয়ে থাকার সময়ও গোড়ালির নিচে ব্যথা হবে।
৪। সবসময় গোড়ালির নিচে ব্যথা হবে শুধু বিশ্রামের সময়।
প্লানটার ফাস্সাইটিসের চিকিৎসাঃ
@ প্রাথমিক প্লানটার ফাস্সাইটিস -
১। বিশ্রাম -ব্যথা উত্তেজক কাজ থেকে বিশ্রাম নেয়া।
২। বরফ-বরফ জমানো বোতল পায়ের নিচে দিয়ে মেসেজ করা ১৫-২০মিনিট দিনে ২-৩ বার।
৩। হিল কুশন (গোড়ালি সাপোর্ট) ব্যবহার করা।
৪। ব্যথা কমাতে ইলেকট্রথেরাপি মোডালিটিস দ্বারা চিকিৎসা নেয়া।
৫। প্রয়োজনে ব্যথার ওষুধ নেয়া যেতে পারে, জজরুরী অবস্থায়।
@ দীর্ঘস্থায়ী প্লানটার ফাস্সাইটিস।
১। প্লানটার ফাস্সা এবং পায়ের পিছনের মাংসপেশির স্ট্রেচিং করা।
২। পায়ের বক্রতা কম থাকলে,মীডিয়াল আর্চ অর্থোসিস ব্যবহার করা।
৩। বায়মেকানিক্যাল ফোল্ট কারেকশন করা ।
৪। নাইট স্পিন্ট ব্যবহার করা, যেটা প্লানটার ফাস্সার প্রদাহ কমাতে সাহায্য করবে।
৫। ব্যায়ামের মাধ্যমে মাংস পেশির শক্তি বৃদ্ধি করা।
প্লানটার ফাস্সাইটিস প্রতিরোধঃ
১। ওজন নিয়ন্ত্রণের রাখা।
২। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখা।
৩। শক্ত জুতা পরিহার করা।
৪। উচু হিল জাতীয় জুতা পরিহার করা।
৫। নরম সলের জুতা ব্যবহার করা।
৫। নিয়মিত ফাস্সা স্ট্রেচিং করা।
৬। খেলাধুলার আগে ওয়ার্ম আপ করা।
No comments:
Post a Comment