অস্টিওয়াথ্রাইটিস কি?



অস্টিওয়াথ্রাইটিস কি?

অস্টিওয়াথ্রাইটিস হল জয়েন্টের অগ্রভাগের হাড়ের  পর্যায়ক্রমিক ক্ষয়জনিত রোগ, যেটা আমাদের কাছে জয়েন্টের বাত রোগ হিসেবে পরিচিত।এতে জয়েন্টে ব্যথা,প্রদাহ, ফুলে জাওয়া এবং জয়েন্টের নড়াচড়া কমে যায়।

কোন কোন জয়েন্ট আক্রান্ত হয়?


সাধারণত শরীরের ভার বহনকারী জয়েন্টগুলো বেশি আক্রান্ত হয়।তবে অন্যান্য জয়েন্টেও হতে পারে।
যেমন-
        ১। হাটুর জয়েন্ট (knee joint)
        ২। নিতম্বের জয়েন্ট (Hip joint)
        ৩। টাকনুর জয়েন্ট ( Ankle joint)
        ৪। কাধের জয়েন্ট ( Shoulder joint)
        ৫। কুনইয়ের জয়েন্ট ( Elbow joint)
 

কাদের হতে পারে?


পুরুষের তুলনায় মহিলাদের ক্ষেত্রে  অস্টিওয়াথ্রাইটিস বেশি দেখা যায়।
চল্লিশ উর্ধ বয়সে এটা আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।
জয়েন্টে আঘাত পেলে, আঘাতজনিত জয়েন্টে হতে পারে।
যাদের ডায়াবেটিস আছে, তাদের হতে পারে।
বংশগত কারণেও হতে পারে।

জয়েন্টে যে যে সমস্যা হতে পারে? 


   ১। জয়েন্ট ব্যথা
   ২। জয়েন্ট প্রদাহ
   ৩। জয়েন্ট ফুলে যাওয়া
   ৪। সকালে ঘুম থেকে উঠলে জয়েন্ট শক্ত অনুভব হওয়া এবং কিছু সময় হাটলে স্বাভাবিক মনে হওয়া।
   ৫। উঠবস করার সময় এক ধরনের শব্দ হওয়া।
   ৬। জয়েন্টের নড়াচড়ার মাত্রা কমে যাওয়া।
   ৭। জয়েন্টের নড়াচড়া কমে যাওয়ার কারনে মাংসপেশি দুর্বল এবং শুকিয়ে যাওয়া ।
এ ধরনের সমস্যা হলে, বুজবেন আপনি অস্টিওয়াথ্রাইটিসে আক্রান্ত হয়েছেন।

একটি বিষয় জেনে রাখবেন । যে অস্টিওয়াথ্রাইটিস এমন একটি রোগ,যেটা কখনো সম্পুর্নরূপে ভালো হয় না। এটার সমস্যা গুলো কে নিয়ন্ত্রণ  করে এবং কিছু নিয়ম মেনে চলে স্বাভাবিক জীবন যাপন করা যায়।

কিভাবে স্বাভাবিক জীবন যাপন করা যায় ?


১।  জরুরি অবস্থায় জয়েন্ট ব্যথা ও প্রদাহের জন্য, ব্যথা ও প্রদাহনাশক ওষুধ খেতে হবে। তবে দীর্ঘদিন এ ধরনের ওষুধ খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। কারণ এতে পাকস্থলী, কিডনি এমনকি হ্রদপিন্ডের ও ক্ষতি হতে পারে।
২। ব্যথা ও প্রদাহ নাশক ওষুধের পরিবর্তে গরম পানির শেক এবং  ফিজিওথেরাপির মাধ্যমে ব্যথা ও প্রদাহের চিকিৎসা নেয়া নিরাপদ।
৩। জয়েন্টের অগ্রভাগের হাড়ক্ষয়রোধ প্রতিরোধ করতে গ্লুকোছামাইন যুক্ত ওষুধ খাওয়া যেতে পারে।
৪। উচ্চতা অনুযায়ী শরীরের ওজন বেশি হলে, ওজন কমাতে হবে।
৫। জয়েন্টের মধ্যে অতিরিক্ত চাপ পড়ে, এমন কাজ থেকে বিরত থাকতে হবে।
৬। মাংসপেশির দুর্বলতার ক্ষেত্রে, মাংসপেশির শক্তি বাড়াতে অবশ্যই একজন ফিজিওথেরাপি চিকিৎসকের পরামর্শ মতো ব্যায়াম করতে হবে।
৭। জয়েন্টের শক্তভাব দূর করতে, মোবিলাইজেশন (এক ধরনের বিশেষ মুভমেন্টে ) করতে হবে ফিজিওথেরাপি চিকিৎসকের তথ্যাবধানে।
৮। ডায়াবেটিস থাকলে ব্লাড গ্লুকোজ লেভেল নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।
৯। স্টেটিক সাইক্লিং করা যেতে পারে।

ওজন নিয়ন্ত্রণ, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ, সুষম খাদ্যাভ্যাস এবং ব্যবস্থাপত্র অনুযায়ী নিয়মিত ব্যায়াম করলে, অস্টিওয়াথ্রাইটিস নিয়েও সুস্থ এবং স্বাভাবিক জীবন যাপন করা যায়।


No comments

Powered by Blogger.